শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
কুলাউড়া প্রতিনিধি :: কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা মৌজার প্রিন্ট পর্চা জমির মালিকদের নিকট বিতরণকালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেট জোনাল অফিসের অধিনস্ত কুলাউড়া সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসের মাধ্যমে পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ৩০ আগষ্ট সকাল থেকে প্রিন্ট পর্চা প্রদানকালে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে দুইশত থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
দীর্ঘদিন পর পৃথিমপাশা মৌজার প্রিন্ট পর্চা গ্রহণের জন্য পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে সকাল থেকে হাজার পাঁচেক মানুষ জড়ো হন। কুলাউড়া সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মচারীরা সকাল থেকে দুপুর ১২ ঘটিকা পর্যন্ত প্রিন্ট পর্চা প্রদানের সময় অর্থ দিলে পর্চা দেন, আর অর্থ না দিলে নানা অজুহাতে প্রিন্ট পর্চা দেয়া থেকে বিরত থেকে পরবর্তীতে কুলাউড়ায় দেখা করার পরামর্শ দেন।
সরেজমিন দুপুর ২ ঘটিকার দিকে প্রিন্ট পর্চা গ্রহণকারী সায়মন জুবায়ের চৌধুরী, উজ্জল আহমদ, বশির আহমদ, এনামুল, মুজিব আহমদ প্রমুখরা জানান সেটেলমেন্ট অফিসের লোকজন এলাকার গরিব অসহায় মানুষের কাছ থেকে দুইশ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা নিয়েছেন। যারা টাকা দেননি তাদেরকে নানা অজুহাতে প্রিন্ট পর্চা না দিয়েই কুলাউড়ায় চলে যান। এতে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন ধরেও অনেকেই প্রিন্ট পর্চা না পেয়ে বাড়ি ফেরেন।
মুজিব আহমদ জানান, পনেরশো টাকার বিনিময়ে আমি প্রিন্ট পর্চা গ্রহণ করি। অনেক গরিব মানুষ টাকা না থাকায় প্রিন্ট পর্চা নিতে পারেন নি। তবে উপস্থিত সেটেলমেন্ট অফিসের লোকজনরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য কিংবা কথা বলতে রাজি হননি।
পৃথিমপাশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সায়মন জুবায়ের চৌধুরী জানান, সেটেলমেন্ট অফিসের লোকজন নিজেদের ইচ্ছামতো টাকার বিনিময়ে প্রিন্ট পর্চা প্রদানের সময় আমরা বিষয়টির প্রতিবাদ জানাই এবং তাৎক্ষণিক ভাবে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে অবগত করি। এ সময় প্রিন্ট পর্চা না দিয়ে সেটেলমেন্ট অফিসের লোকজন দুপুরের দিকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে সাধারন মানুষ প্রতিবাদ জানায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য নবাব আলী সাজ্জাদ খাঁন জানান, সরকারের নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরাসরি অর্থ আদায় শুরু করলে সেটেলমেন্ট অফিসের লোকজনের অনিয়মের বিষয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানায়। পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকায় খবর পেয়ে আমরা উপস্থিত হয়ে বিকাল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত প্রিন্ট পর্চা প্রদানের অনুরোধ জানান। অনিয়মের বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কুলাউড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান খোন্দকার বলেন, পৃথিমপাশায় প্রিন্ট পর্চা প্রদানে নির্ধারিত ফি ছাড়া কোনো লেনদেন না করার জন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিষয়টির অভিযোগ পেয়ে সিলেটের ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের জোনাল অফিসারকে অবগত করেছি।
এ বিষয়ে সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওয়াবদুর রহমান বলেন, প্রিন্ট পর্চা প্রদানকালে আর্থিক লেনদেন মোটেও কাম্য নয়। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।